 
                    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ২০২৫’ উদ্যাপন উপলক্ষে এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘দুর্যোগ ও সংকটকালীন সময়ে মানসিক স্বাস্থ্য সেবার সহজলভ্যতা’ এর উপর এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৯ অক্টোবর (বুধবার) বিকাল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ ও বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটি (বিসিপিএস) এর উদ্যোগে নাসিরুল্লাহ ফাউন্ডেশন কনফারেন্স হলে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পিএইচডি এর সভাপতিত্বে এবং ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের প্রভাষক লিজা আক্তারের সঞ্চালনায় উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জীববিজ্ঞান অনুষদের মাননীয় ডিন অধ্যাপক ড. মো. এনামুল হক এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিভাগীয় চেয়ারম্যান ড. মো. শাহানূর হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য খাতে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজির গুরুত্ব অপরিসীম। দক্ষ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট গড়ে তুলতে হাসপাতালগুলোতে ক্লিনিক্যাল প্লেসমেন্টের বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আমাদের অনেক করণীয় আছে।
যারা ডাক্তার হবেন তাদেরও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজির বিষয়গুলো বুঝে আরও মানবিক ডাক্তার হওয়ার বিষয়ে তিনি গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মর্মান্তিক ট্রাজেডির পরে শিশুদের ট্রমা থেকে বের করে আনতে এবং শিক্ষার পরিবেশ স্বাভাবিক করতে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. এনামুল হক বলেন, বর্তমানে অনেক ধরনের ট্রমা তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন দুর্যোগের কারণে কিন্তু যথাযথ সচেতনতা না থাকায় মানুষ বুঝতে পারে না তার মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নেওয়া প্রয়োজন। একজন ব্যক্তি মানসিক সমস্যায় পড়লে সে প্রথমে নিজে থেকে চেষ্টা করে, না পারলে তাকে অবশ্যই মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবীর শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বিভাগীয় চেয়ারম্যান ড. মো. শাহানূর হোসেন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে ক্লিনিক্যাল প্লেসমেন্টের জন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পিএইচডি বর্তমান মনোবিজ্ঞানের বাস্তবিক খাতের বৈচিত্রতা সম্পর্ক আলোচনা করেন। তিনি বলেন, আমাদের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টদের অপ্রতুলতা আমাদের দুর্যোগকালীন সময়ে সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই আরও বেশি সংখ্যক ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট তৈরি করা দরকার। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সকল প্রকার সহযোগিতা করবে।
এ সময় সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অনারারি অধ্যাপক এবং ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) এর প্রো-ভিসি ড. মুহাম্মাদ মাহমুদুর রহমান এবং বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক কামাল উদ্দীন আহমেদ চৌধুরী, অধ্যাপক ড. এম. কামরুজ্জামান মজুমদার, সহকারী অধ্যাপক ও সাবেক চেয়ারম্যান মিসেস জোবেদা খাতুন, প্রভাষক মো. আশিকুর রহমান, খণ্ডকালীন শিক্ষক ও মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ড. জহির উদ্দীন এবং বিভাগের বর্তমান ও অ্যালামনাই শিক্ষার্থীবৃন্দ।
উল্লেখ্য, মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৯২ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশে এই সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে প্রধান দুটি বাধা হলো—স্টিগমা ও মানসিক স্বাস্থ্য সেবার অপ্রতুলতা, যা দূর করার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ ও বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটি (বিসিপিএস) ১৯৯৭ সাল থেকে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং প্রতিবছর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে নানা কর্মসূচি আয়োজন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবছরও দিবসটি উদ্যাপন এবং দেশের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাসব্যাপী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে ঢাবির ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ ও বিসিপিএস।
ধনব্যাদান্তে
স্বাক্ষরিত/
ড. মো. শাহানূর হোসেন
চেয়ারম্যান, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
এবং সাধারণ সম্পাদক, বিসিপিএস