কয়েক মাস ধরে চলা এই পরিবর্তিত পৃথিবী আমাদের পারিবারিক জীবনকে অনেকটাই তছনছ করে দিয়েছে। পরিবারে যাদের কিশোর বয়সের সন্তান রয়েছে তাদের উপর এই স্ট্রেস এর মাত্রা বেশি। কৈশোরকাল এমনিতেই চ্যালেঞ্জিং তার ওপরে করোনা পরিস্থিতি একে আরো জটিল করে তুলেছে। অনেক পরিবারেই দেখা যাচ্ছে বাবা-মার সাথে কিশোর বয়সের ছেলেমেয়েদের সম্পর্ক নেতিবাচক হয়ে পড়েছে।
বাবা মা অথবা অভিভাবক হিসাবে ধৈর্যের সাথে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে আপনি তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করতে পারেন।
১. প্রথমত মাথায় রাখুন আপনার সন্তান হলেও তার নিজস্ব কিছু চিন্তা ধারা, মতামত, পছন্দ-অপছন্দ রয়েছে। অর্থাৎ তার স্বতন্ত্র সত্তাকে স্বীকৃতি দিন।
২. তাদের ভাবনা চিন্তার সঙ্গে পরিচিত হন, তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন।
৩. তাদের কাছ থেকে নতুন কিছু শেখার ব্যাপারে আগ্রহী হন।
৪. যখন তারা কিছু বলতে চাইবে তখন পরিপূর্ণ দৃষ্টিতে তাদের দিকে তাকান এবং পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা বোঝার চেষ্টা করুন। এতে তারা accepted বোধ করবে এবং আপনার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করবে।
৫. মনে রাখবেন যে বিষয়টি বা পরিস্থিতি আপনার নিজের জন্যই অনেক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেটি তার উপরেও অনেক বেশি চাপ তৈরি করছে।
৬. তাদের রাগ, জেদ কিংবা কথা না শোনা ইত্যাদির পেছনের যৌক্তিক কারণ কি তা বোঝার চেষ্টা করুন।
৭. রাগ বা বিরক্ত না হয়ে বরং আপনি তার কাছে কি প্রত্যাশা করেন বা কোন আচরণটি দেখতে চান তা ঠান্ডা মাথায় বুঝিয়ে বলুন।
৮. 'না' শব্দটি ব্যবহার না করে বরং ইতিবাচকভাবে বলুন। আপনার উপস্থাপনের ধরনের উপরেই অনেক কিছু নির্ভর করে।
৯. পড়াশুনার ব্যাপারে কম চাপ দিন। অভিযোগের সুরে কথা না বলে তার কাছে আপনার প্রত্যাশার বিষয়টি স্পষ্ট করে জানান।
১০. তার সাথে আলাপ করে তার একটি দৈনন্দিন কাজের রুটিন তৈরি করতে উৎসাহিত করুন। এটি অলিখিত হতে পারে।
১১. একটি রুটিন মেনে চলার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আপনার ভাবনাগুলি যৌক্তিকভাবে তুলে ধরুন।
১২. তার বন্ধুদের সাথে ফোন কিংবা অনলাইনে যোগাযোগের সুযোগ তৈরি করে দিন। সমবয়সীদের সঙ্গে আলাপচারিতা তাদের মধ্যকার অশান্ত ভাবকে প্রশমিত করবে।
১৩. তবে অবশ্যই অনলাইনে তারা কার সাথে যোগাযোগ করবে এবং কতক্ষণ ইন্টারনেট ব্যবহার করবে সে ব্যাপারে খোলাখুলি আলোচনা করুন। সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছান।
১৪. সোশ্যাল মিডিয়া, গেমস, বিভিন্ন অ্যাপস সম্ভব হলে একসাথে উপভোগ করুন।
১৫. তাকে তার বয়স উপযোগী বিভিন্ন কন্টেন্ট এর সাথে পরিচিত করুন। পাশাপাশি আপনিও শিখুন।
১৬. আপনার সন্তান নিজেকে কিভাবে অনলাইনে সুরক্ষিত রাখবে সে সম্পর্কে খোলামেলা আলাপ করুন।
১৭. কোন অনভিপ্রেত বা অনুপযুক্ত বিষয়ের সম্মুখীন হলে তারা কোথায় সাহায্য পেতে পারে সে সম্পর্কে ধারণা দিন এবং আপনার কাছে এসে তা বলতে উৎসাহিত করুন।
১৫. পাশাপাশি তাদের সাথে সহজ ও সাবলীল সম্পর্ক বিকাশের জন্য তাদের পছন্দের বিষয় নিয়ে কথা বলুন সেটা খেলাধুলা, সঙ্গীত, সিনেমা, ধর্মীয় আলোচনা, প্রেম বা বন্ধু-বান্ধব যেকোনো কিছুই হতে পারে।
১৫. তার পছন্দের খাবার তাকে সাথে নিয়ে রান্না করুন। সংসারের কাজকর্ম একসাথে আনন্দের সাথে করার প্রচেষ্টা নিন।
১৬. একসাথে গান শুনুন পারলে গানের সঙ্গে তাকে সাথে নিয়েই শরীরচর্চা করুন।
১৭. মজা করুন, কৌতুক করুন। একসঙ্গে আনন্দ উচ্ছল হাসিখুশি সময় কাটান। মনের কালো মেঘ কাটাতে এটি একটি কার্যকরী উপায়।
১৮. এই বয়সে তাদের অন্যের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। করোনা পরিস্থিতি এই বিষয়টিকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। তাই আপনার সন্তান সম্পর্কে এমন কিছু জানতে পারলে হইচই কিংবা চাপাচাপি না করে ধৈর্যের সাথে বিষয়টি মোকাবেলা করুন।
১৯. আপনার বাধা তাকে বিষয়টির প্রতি আরও আকর্ষণ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাদের অতীতের ভুল ভ্রান্তি টেনে এনে তাদেরকে আঘাত না করে বিষয়টি থেকে তারা কিভাবে শিক্ষা নিতে পারে সেই ব্যাপারে সাহায্য করুন।
২০. পরিশেষে বলতে হয় আপনি নিজের যত্ন নিন। আপনার বিশ্রাম, প্রফুল্ল চিত্ত, প্রশান্তি আপনাকে আপনার কিশোর বয়সের ছেলেমেয়েদের সাথে সুন্দর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরিতে সাহায্য করবে।
24 November, 2020 |
17 July, 2020 |
24 May, 2020 |
24 May, 2020 |
21 May, 2020 |
10 May, 2020 |
10 May, 2020 |
04 May, 2020 |
03 May, 2020 |
03 May, 2020 |
02 May, 2020 |
02 May, 2020 |
02 May, 2020 |
02 May, 2020 |
30 April, 2020 |
30 April, 2020 |
29 April, 2020 |
29 April, 2020 |