ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চতর মানববিদ্যা গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে আজ ২৭ মার্চ ২০১৬ রবিবার কেন্দ্রের মমতাজুর রহমান তরফদার সভাকক্ষে মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শীর্ষক দিনব্যাপী সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই সেমিনারের উদ্বোধন করেন।
উচ্চতর মানববিদ্যা গবেষণা কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে “১৯৫জন পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর বিচার: বহির্বিশ্বের প্রতিক্রিয়া” শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু মো: দেলোয়ার হোসেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ১৯৭১ সালের আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পাকিস্তান এবং তাদের এদেশীয় দোসররা এখনো মিথ্যাচার করছে। ’৭৫ পরবর্তী এদেশের একজন প্রধানমন্ত্রী, অনেক মন্ত্রী এবং অনেক রাজনীতিবিদ পাকিস্তানের পক্ষপাতিত্ব করছে এবং আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করছে। কিন্তু আমাদেরকে সত্য নিয়ে চলতে হবে। নতুন প্রজন্ম ’৭১ দেখেনি। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে, শহীদদের সংখ্যা নিয়ে যারা কটাক্ষ করছে, মিথ্যাচার করছে, বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছে, নতুন প্রজন্ম তাদেরকে প্রতিহত করে সঠিক ইতিহাস জানবে এবং দেশকে ভালোবাসবে।
অধ্যাপক ড. আবু মো: দেলোয়ার হোসেন তাঁর প্রবন্ধে বলেন, ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে দালালরা সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে নীতি নির্ধারকে পরিণত হয়। বিএনপি আমলে তারা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী পরিষদসহ সর্বত্র জায়গা করে নেয়। ১৮ দলীয় জোটের শরিক দলে জামাতসহ একাধিক ঘাতক দল রয়েছে। যে কারণে তারা মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে মন্তব্য করার সাহস দেখায়। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানে নিয়ে পাক যুদ্ধবন্দিদের মধ্যে দোষীদের বিচারের প্রতিশ্রæতি দিয়ে তা ভঙ্গ করেছেন। প্রতিশ্রæতি ভঙ্গের কারণে এবং ইদানিং পাকিস্তান যে ধরণের অকূটনৈতিক সূলভ মনোভাব দেখাচ্ছে তাতে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল আইনের মাধ্যমে দালাল ও পাক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা যায়। বর্তমান সরকারের মানবতাবিরোধীদের বিচার কার্যকরের উদ্যোগকে আমরা তাই সাধুবাদ জানাই এবং দ্রæত বিচার ও বিচারের রায় কার্যকরের আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
সেমিনারের ২য় পর্বে “বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ১৯৭১-২০১৬” শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আশফাক হোসেন এবং “মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভূমিকা” শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান।
--------------
(মাহমুদ আলম)
উপ-পরিচালক
জনসংযোগ দফতর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়