বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে আজ ১৭ মার্চ ২০১৬ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৫তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদ্যাপিত হয়েছে। দিবসটি উদ্যাপন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করে।
জন্মদিনের প্রাক্কালে গতকাল রাত ১২টা ১ মিনিটে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে কেক কাটার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচী। অন্যান্য কর্মসূচীর মধ্যে ছিল- সকালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সঙ্গীতানুষ্ঠান প্রভৃতি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যগণ সকালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পু®পস্তবক অর্পণ করেন। পরে উপাচার্যের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনায় অংশ নেন প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক, যুগ্ম সম্পাদক নীলিমা আকতার, অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ আলী আকবর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড ইউনিটের পক্ষ থেকে গোলাম রব্বানী, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বঙ্গবন্ধু সমাজ কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো: ইমাম হোসেন শেখ, কর্মচারী সমিতির সভাপতি মো: রেজাউল ইসলাম এবং কারিগরি কর্মচারী সমিতির সভাপতি মো: মোজাম্মেল হক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান আলোচনা সভা পরিচালনা করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চেতনা ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর আত্মবিশ্বাস ও প্রত্যয়বোধের সর্বোপরি দেশপ্রেমের আদর্শে নিজেদের জীবন গড়ে তোলার জন্য সকলের প্রতি আহŸান জানিয়ে বলেন, তাহলেই জন্ম দিবস উদ্যাপন সার্থক হবে। তিনি বলেন, ‘১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জন্মের পর থেকে সংক্ষিপ্ত জীবনে পর্যায়ে পর্যায়ে অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে বঙ্গবন্ধু যে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন, তা অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে। উপাচার্য বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধু জীবনের একটি মুহুর্তও অযথা ব্যয় করেননি। তাঁর জীবনাদর্শ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করে বলেন, একটি কুচক্রী মহল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছিল। মহলটি তাঁর আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। তবে একটা প্রজন্মের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে, অসত্য ইতিহাস তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল, আজকেও আমাদের ৩০ লক্ষ মানুষের আত্মাহুতিকে নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে। এ অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের নিন্দা জানানোর ভাষা নেই, ঘৃণা করি। উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু মৃত্যুর মুখেও আপোষকামীতার আশ্রয় গ্রহণ করেননি। তিনি সত্যের পথ অবলম্বন করেছেন, সত্য থেকে বিচ্যুত হননি। তাই আজকের প্রজন্মের সাথে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মূল্যবোধের সেতুবন্ধন তৈরি করে দিতে হবে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে তা অব্যাহত রেখে আমাদের দায়িত্ববোধের প্রমাণ রাখতে হবে। আমাদের দায়িত্ব পূরণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু সাধারণ মানুষের প্রতি যে মমতা ও অঙ্গীকার রেখেছেন- অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে আমাদের সকলকে কর্মের মধ্য দিয়ে সেই অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য সকলের প্রতি আহŸান জানান।
এছাড়া, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদসহ আবাসিক হল, হোস্টেল, মসজিদ ও উপাসনালয়ে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়।
চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে সকালে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের ক্যাফেটেরিয়ায় চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। মোট ৩টি গ্রæপে এই প্রতিযোগিতায় ঢাকা ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরী স্কুল ও কলেজ, উদয়ন উচ্চ বিদ্যালয়, নীলক্ষেত উচ্চ বিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকার শিশুরা অংশগ্রহণ করে।
------------------
পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত)
জনসংযোগ দফতর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়