ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল ৯ ডিসেম্বর ২০১৫ বুধবার ‘রোকেয়া দিবস-২০১৫’ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় রোকেয়া হল মিলনায়তনে ‘রোকেয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন বক্তৃতা, স্বর্ণপদক ও বৃত্তি প্রদান’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ফাউন্ডেশন বক্তৃতা প্রদান করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক কর্মী অধ্যাপক কাজী মদিনা।
রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষা অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রধান অতিথি এবং প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রোকেয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও হলের আবাসিক শিক্ষিকা লাফিফা জামাল।
অধ্যাপক কাজী মদিনা “ভেঙ্গেছে দুয়ার, এসেছে জ্যোতির্ময় তোমারি হউক জয়” শীর্ষক ফাউন্ডেশন বক্তৃতায় বেগম রোকেয়ার জীবনের মুক্ত চিন্তা, সৃজনশীলতা এবং সমাজ সংস্কার প্রচেষ্টায় নারীমুক্তির আন্দোলন প্রসঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি বলেন প্রদীপ্ত বাঙালি রোকেয়া সমগ্র এশিয়ায় নারীবাদী আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ। গ্রাম বাংলার নারী সমাজের কুপমÐুকতা, রক্ষণশীলতা সর্বোপরি ধর্মীয় অপব্যখ্যার হাত থেকে নারী সমাজকে রক্ষা করতে হলে রোকেয়ার আদর্শ এবং চেতনা সমাজে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রাসঙ্গিকতা আজকেও অপরিহার্য।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতে বিজয়ের মাসের শুভেচ্ছা জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লক্ষ শহীদসহ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্বে এই বাংলাদেশ যদি আমরা না পেতাম তা হলে বেগম রোকেয়াকে স্মারণ করে দিবস উদযাপন সম্ভব হতো না। শুধু আজকের এই দিনটিই নয়, মহীয়সী এই ব্যক্তিটিকে প্রতিটি দিনই স্মরণ করা উচিত। বর্তমানে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈষম্য বিরাজ করছে। এই বৈষম্য দূর করতে হলে বেগম রোকেয়ার আদর্শকে ধারণ করে নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে নিতে হবে। একটা সমাজে দু’টি চোখ,একটি পুরুষ আরেকটি নারী। নারী পুরুষকে সমানভাবে এগিয়ে যেতে হবে। নারীদের পেছনে ফেলে সমাজকে কখনো সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। উপাচার্য রোকেয়া হলের ছাত্রীদের বেগম রোকেয়ার দর্শন, শিক্ষা, মানবতাবোধ, সমাজ এবং সাংস্কৃতিক চেতনা অনুসরণ ও অনুকরণ করে তাঁর আদর্শকে সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রতি আহŸান জানান। তিনি বলেন, বেগম রোকেয়া যেমন তাঁর কর্ম, লেখনীর মাধ্যমে কাজ করে গেছেন, তেমনি আজকের রোকেয়া দিবসের মূল কর্ম চেতনা হলো তোমরা সারাদেশে শিক্ষার সাহায্যে তোমাদের জ্ঞানের আলো চারদিকে ছড়িয়ে দিবে।
পরে উপাচার্য অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক রোকেয়া হলের মেধাবী ছাত্রীদের মাঝে স্বর্ণপদক ও বৃত্তি প্রদান করেন। ২০১৫ শিক্ষাবর্ষে হলের স্বর্ণপদক পেয়েছেন - জেনিনা ইসলাম আবির (এম.এস.এস, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ)। মেধাবৃত্তি লাভ করেছেন - এলিজাবেথ বিয়াংকা সরকার (এম.এস ফলিত পরিসংখ্যান বিভাগ), আছিয়া খাতুন (এম.বি.এ, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ), সুমাইয়া ফারহানা সুমী (এম.এ, ভাষাবিজ্ঞান বিভাগ), আসমাউল হোসন (এম. এস, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ)। সাধারণ বৃত্তি পেয়েছেন - নাদিরা নাজনীন রাখী ও আায়েশা রহমান (৩য় বর্ষ, বি.এস, অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগ), নাজমা আহমেদ (২য় বর্ষ, বি.এস, দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ), নওশীন তাবাসুম (১ম বর্ষ, বি.এস.এস, উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ) এবং কল্যাণ বৃত্তি দেওয়া হয়েছে নুসরাত জাহানকে (১ম বর্ষ, বি.এস.এস, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ)।
এছাড়া, রোকেয়া দিবস উপলক্ষে গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে রোকেয়া হলের উদ্যোগে হল চত্বর থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
--------------
পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত)
জনসংযোগ দফতর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
গতকাল ৯ ডিসেম্বর ২০১৫ বুধবার সন্ধ্যায় ‘রোকেয়া দিবস-২০১৫’ উপলক্ষে রোকেয়া হল মিলনায়তনে ‘রোকেয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন বক্তৃতা, স্বর্ণপদক ও বৃত্তি প্রদান’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ফাউন্ডেশন বক্তৃতা প্রদান করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক কর্মী অধ্যাপক কাজী মদিনা। হলের প্রাধ্যক্ষা অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রধান অতিথি এবং প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ছবিতে অতিথিদের সাথে রোকেয়া হলের বৃত্তিপ্রাপ্ত মেধাবী ছাত্রীদের দেখা যাচ্ছে। (ছবি: ঢাবি জনসংযোগ)