প্রাচ্যদেশীয় শিল্পরীতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে ৪ (চার) বছরের যে প্রোগ্রামটি প্রাচ্যকলা বিভাগে পরিচালিত হয় সেটি বিএফএ সম্মান প্রোগ্রাম। বিএফএ (ব্যাচেলর অব ফাইন আর্ট) প্রোগ্রামের প্রথম বর্ষে মৌলিক বিষয় যেমন- ড্রয়িং, স্কেচ, কম্পোজিশন, পরিপ্রেক্ষিত, নকশা ইত্যাদির ওপর জোর দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষে গুরুত্ব দেওয়া হয় প্রাচ্যরীতির ড্রয়িং, ওয়াশ পদ্ধতিতে কম্পোজিশন, টেম্পারা, ফ্রেস্কো পদ্ধতিসহ অনুশীলন মূলক প্রাচ্যরীতির চিত্রনির্মাণ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করার ওপর। মাধ্যমগুলো আয়ত্ত করার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীরা চারপাশের বস্তুজগৎ অনুশীলন দ্বারা বস্তুর যথাযথ অবয়ব অঙ্কন ও পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা অর্জন করতে সক্ষম হয়। চতুর্থ বর্ষে উদ্দেশ্য থাকে প্রাচ্যরীতির এইসব মাধ্যম শেখার পাশাপাশি সেগুলো নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ঐতিহাসিক ও সাম্প্রতিক শিল্পজগতের পরিপ্রেক্ষিতে স্বীয় অনুশীলন বিবেচনা ও আলোচনা করতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহী করে তোলা। অঙ্কন ও নির্মাণ কোর্সের পাশাপাশি বিএফএ প্রোগ্রামে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য শিল্পের ইতিহাস ও নন্দনতত্ত্বের তাত্ত্বিক পাঠ দেওয়া হয়।
দর্শন: প্রাচ্যদেশীয় শিল্পের ওপর গুরুত্ব দিয়ে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে সৃষ্টিশীল কর্ম-প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক মান অর্জন করা।
লক্ষ্য:
১. কার্যকর গবেষণা, পঠন-শিখন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিমানসম্পন্ন শিক্ষা অর্জন।
২. জ্ঞান আহরণ ও নির্মাণের ভিত্তিতে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদেরই নয়, পুরো জাতি তথা সমগ্র
বিশ্বকে আলোকিত করা, বিশ্বমানবতার সেবায় সৃজনশীল ও উদ্দীপনামূলক উদ্যোগ গ্রহণে উদ্দীপ্ত করা।
বিএফএ প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য:
প্রাচ্যকলা বিভাগ বিএফএ সম্মান প্রোগ্রামে নিম্নলিখিত সক্ষমতা ও গুণাবলি অর্জন করার প্রত্যয়ে সক্রিয়:
১. প্রাচ্যদেশীয় শিল্প সম্পর্কে আগ্রহ তৈরি ও তার সম্ভাবনা আবিষ্কার।
২. সহজাত প্রবণতা এবং কল্পনাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় আগ্রহী করা।
৩. অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে সৃষ্টিশীল শিল্পচর্চায় উদ্বুদ্ধ করা।
৪. দৃশ্যশিল্পের ভাষা, প্রাসঙ্গিকতা এবং পারস্পরিক সম্পর্ক পাঠ করার সক্ষমতা অর্জন।
৫. সমালোচনা ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা, শনাক্ত করার ক্ষমতা, সুসংবদ্ধ পদ্ধতিতে গবেষণা এবং মূল্যায়ন করা।
৬. নিজস্ব সাংস্কৃতিক প্রাসঙ্গিকতায় শিল্পের স্বাধীন, সৃষ্টিশীল, মানবিক ও সামাজিক তাৎপর্য বোঝার সক্ষমতা অর্জন করা।
৭. সর্বোপরি একজন মানবিক বিবেচনাবোধ সম্পন্ন সৃজনশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা।
বিএফএ প্রোগ্রামের ফলাফল:
১. প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা তৈরি।
২. স্থানিক শিল্প সম্পর্কে আগ্রহ সৃষ্টি।
৩. স্থানিক বা দেশজ শিল্পের বৈশিষ্ট্যগুলো আয়ত্ত করে তা নিয়ে সমসাময়িক শিল্পের ভাষায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে শেখা।
৪. প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য শিল্পের নন্দনতাত্ত্বিক বিতর্কগুলো সম্পর্কে ধারণা লাভ করা।
৫. ধ্রুপদি ও লোকশিল্পের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক পার্থক্য সম্পর্কে ধারণা লাভ করা।
৬. সর্বোপরি একজন সুন্দর ও সুষ্ঠু মানসিকতার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করা।