৯ মার্চ ২০২৪, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আবহাওয়া বিজ্ঞান এবং এভয়েডেবল ডেথস নেটওয়ার্ক (ADN) কর্তৃক পরিহারযোগ্য মৃত্যুর জন্য আন্তর্জাতিক সচেতনতা দিবস (IAD4AD) ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়। এই ইভেন্টের লক্ষ্য ছিল প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো এবং কার্যকরভাবে ঝুঁকি কমানোর কৌশলগুলি প্রচার করা। ইভেন্টে, উল্লেখযোগ্য বক্তা এবং বিভিন্ন সেক্টরের অংশগ্রহণকারীরা উপস্থিত ছিলেন এবং পরিহারযোগ্য মৃত্যু কমাতে সক্রিয় পদক্ষেপের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন। পারস্পারিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, অভিজ্ঞতা শেয়ার এবং দুর্যোগের বিরুদ্ধে অগ্রিম স্থিতিস্থাপক প্রতিরোধ জোরদার করার মধ্য দিয়ে দুর্যোগে মৃত্যু হ্রাস সম্ভবপর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. এ.এস.এম. মাকসুদ কামাল অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন। উক্ত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব মোঃ মিজানুর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ মাকসুদুর রহমান। এছাড়াও আমাদের মধ্যে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ADN-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং লিসেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. নিবেদিতা রে-বেনেট। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রতিনিধি আনা মেরিকুইনা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন ও সহযোগী অধ্যাপক ড. ফাতিমা আক্তার।
ড. ফাতিমা আক্তার " Early Warning & Early Action: Advancing Meteorology in Avoidable Disaster Death" শীর্ষক একটি উপস্থাপনা দিয়ে প্রোগ্রামটি শুরু করেন যা প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং দুর্যোগ-সম্পর্কিত প্রাণহানি কমাতে কার্যকর পদক্ষেপগুলি তুলে ধরেন। পরে অংশগ্রহণকারী বক্তারা আরো কয়েকটি উপস্থাপনা করেন। Director of the International Drowning Research Centre-Bangladesh এর পরিচালক ড. আমিনুর রহমান পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধে কমিউনিটি ডে কেয়ার সেন্টার এবং সুইম সেফ প্রোগ্রামের মতো উদ্যোগের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। মোঃ শাহজাহান, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডিআরসিএস) এর সমন্বয়কারী, গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তুলে ধরে তাপপ্রবাহের হুমকি মোকাবেলায় সংগঠনের আগাম কর্মপরিকল্পনা প্রবর্তন করেন। এরপর ডাঃ ফারিহা হাসিন, সহযোগী অধ্যাপক, জনস্বাস্থ্য ও তথ্যবিজ্ঞান বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, দুর্যোগের সময় নারী ও কিশোরী মেয়েরা যে দুর্বলতার সম্মুখীন হয় তা মোকাবেলায় জেন্ডার-প্রতিক্রিয়াশীল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
সম্মানিত অতিথি ডঃ নিবেদিতা রে-বেনেট ADN থিম সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং IAD4AD এর চারটি উদ্দেশ্যের রূপরেখা দেন। এর মধ্যে রয়েছে পরোক্ষ দুর্যোগে প্রাণহানি এবং নিখোঁজ ব্যক্তিদের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, অন্তর্নিহিত কারণ এবং পরিস্থিতির নথিভুক্ত করা, 'দুর্যোগের মৃত্যু এড়ানো যায়' স্লোগানকে চ্যাম্পিয়ন করা এবং দুর্যোগ-সম্পর্কিত প্রাণহানি কমানোর জন্য সক্রিয়ভাবে প্রচেষ্টা করা। আলোচনার পর ড. মোঃ মাকসুদুর রহমান, প্রক্টর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, দুর্যোগজনিত প্রাণহানি কমাতে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
পরে অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব মোঃ মিজানুর রহমান দুর্যোগজনিত মৃত্যু কমানোর বিষয়ে তার মূল্যবান দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। তিনি ১৯৭১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত এই ধরনের মৃত্যু কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতির কথা তুলে ধরেন। তিনি আরও জোর দিয়েছিলেন যে অনেক বিপর্যয় মানব-প্ররোচিত, যা কার্যকর ব্যবস্থার মাধ্যমে মৃত্যুর হার এবং সম্পত্তির ক্ষতি হ্রাস করা সম্ভব করে তোলে। তিনি পদ্মা সেতুর মতো উদাহরণ উদ্ধৃত করে অবকাঠামো উন্নয়নের গুরুত্ব উল্লেখ করেন এবং পানিতে ডুবে মৃত্যু কমাতে সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।